
ক্রিকেটকে ‘জেন্টলম্যানের’ খেলা বলা হয়। বিশ্ব ক্রিকেটে এমন অনেক ক্রিকেটার রয়েছেন, যারা তাদের ভদ্র আচরণের জন্য চিরকাল অমর হয়ে রইবে। ভারতীয় ক্রিকেটের সর্বকালের সেরা ওপেনার বীরেন্দ্র শেওয়াগ ক্রিকেট বিশ্বের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। ব্যাট হাতে একের পর এক ম্যাচে বিধ্বংসী ইনিংস খেলেছেন তিনি। টেস্ট ক্রিকেটে এখনো পর্যন্ত ভারতীয় ক্রিকেটারদের মধ্যে দুটি ট্রিপল সেঞ্চুরি রয়েছে তার নামে। টেস্ট কিংবা একদিনের ম্যাচ অথবা টি-টোয়েন্টি, বোলারকে উত্তম-মধ্যম প্রহর করাই ছিল তার নিত্যনৈমিত্তিক কাজ।
ক্রিকেট বিশ্ব এমন কোন বোলার ছিলেন না যিনি বীরেন্দ্র শেওয়াগকে ভয় পেতেন না। শেওয়াগকে সাজঘরে ফেরাতে পারলে বিপক্ষের বোলারদের মুখে চওড়া হাসি দেখা যেত। তবে আউট হওয়া সত্ত্বেও এক বার সাজঘরে ফেরেননি বীরেন্দ্র শেওয়াগ। সৌজন্যে পাকিস্তানের প্রাক্তন আম্পায়ার আসাদ রউফ। কী ভাবে তা সম্ভব হল? খোলসা করেছেন খোদ স্বয়ং বীরেন্দ্র শেওয়াগ।
২০০৮ সালে রিকি পন্টিং-এর নেতৃত্বে ভারত সফরে এসেছিল অস্ট্রেলিয়া। মোহালিতে চলছিল সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ। আর সেই ম্যাচেই ঘটে এই বিস্ময়কর ঘটনা। ম্যাচে আউট হলেও সাজঘরে ফেরেননি তিনি। বীরেন্দ্র শেওয়াগ ব্যাটসম্যান হিসেবে যতটা বিধ্বংসী ছিলেন, ঠিক মনের দিক থেকে ততটাই সহজ ছিলেন তিনি। যে কারোর মন সহজে জয় করার ক্ষমতা ছিল বীরেন্দ্র শেওয়াগের।
তিনি জানতেন, পাকিস্তানের আম্পায়ার আসাদ রউফ ব্র্যান্ডেড চশমা, জুতো এবং জামাকাপড়ের সৌখিন ছিলেন। বীরেন্দ্র শেওয়াগ একবার তাকে নানা প্রকারের ব্র্যান্ডেড জিনিস উপহার পাঠিয়েছিল। রসিকতার ছলে তিনি আসাদ রউফকে বলেছিলেন, ম্যাচে আউট হলেও যেন তাকে আউট না দেওয়া হয়।
বীরেন্দ্র শেওয়াগের সেই রসিকতা সত্যি মনে করেন পাক আম্পায়ার আসাদ রউফ। তাইতো ওই ম্যাচে মিচেল জনসনের বলে বীরেন্দ্র শেওয়াগ পরিষ্কার আউট হলেও আঙুল তোলেননি রউফ। এমনটাই দাবি করলেন ভারতের এই প্রাক্তনী। তখন নাকি বীরেন্দ্র শেওয়াগ ব্যক্তিগত ৮০ রানে ব্যাটিং করছিলেন।
তিনি আরো বলেন, বলটি আমার ব্যাটের কোনায় এত জোরে লেগেছিলো যে, গ্যালারি থেকে তার শব্দ শোনা গিয়েছিল। অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক রিকি পন্টিং হতবাক হয়ে গিয়েছিলেন আম্পায়ারের কার্যকলাপ দেখে। তিনি দৌড়ে আমার কাছে এসে জিজ্ঞাসা করেন ব্যাটে লেগেছে কিনা। আমি সরাসরি বলি ‘হ্যাঁ’ লেগেছে। আমার কথা শুনে রিকি পন্টিং ফিল্ড আম্পায়ার আসাদ রউফের সাথে তর্কে জড়িয়ে পড়েন। তবে তর্ক শেষে আম্পায়ার থাকে নট আউট বলে ঘোষণা করে। বীরেন্দ্র শেওয়াগ আরো বলেন, আম্পায়ার নট আউট দিলেও সেই ইনিংস আমার খুব একটা লম্বা হয়নি। ব্যক্তিগত ৯০ রান করে সাজঘরে ফিরি আমি।
