
টিম ইন্ডিয়ার অধিনায়ক বিরাট কোহলি জানিয়েছেন, ২০১৪ সালে ইংল্যান্ড সফরের পর তিনি মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। ২০১৪ টেস্ট সিরিজে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ব্যাটিং তাঁর জন্য একটি কঠিন সময় ছিল। সেই সময় তিনি পাঁচটি টেস্টে ১, ৮, ২৫, ০, ৩৯, ২৮, ০,৭, ৬ এবং ২০ স্কোর করেন। সেঞ্চুরি তঁ দূর একটি অর্ধ শতরানও পাননি তিনি। তার ১০ ইনিংসে গড় ছিল ১৩.৫০ । ইংল্যান্ডের অভিজ্ঞ পেসার জেমস অ্যান্ডারসন ইংল্যান্ড সফরের সময় কোহলির ক্রিজে টিকে থাকা কঠিন করে তোলে। ইংল্যান্ডের প্রাক্তন খেলোয়াড় মার্ক নিকোলাসের সাথে তার ‘শুধু ক্রিকেট নয়’ পডকাস্টে, কোহলি স্বীকার করেন যে তিনি সেই সফরের সময় মানসিক অবসাদের মধ্যে দিয়ে গিয়েছিলেন।
যখন তাকে জিজ্ঞেস করা হয় যে সে সময় তিনি বিষণ্ণতায় ভুগছিলেন কিনা তিনি বলেন, “হ্যাঁ, কেরিয়ারের একটা টাইমে আমি অত্যন্ত বিষণ্ণতার মধ্যে দিয়ে কাটিয়েছিলাম। আমি গত কয়েকটি ম্যাচে একের পর এক রান তুলতে ব্যর্থ হয়েছেন, এবং কোন কিছুই আমার নিয়ন্ত্রনে থাকছে না এটা জেনে সকালে জেগে ওঠা অত্যন্ত কঠিন ব্যাপার এবং আমি মনে করি সব ব্যাটসম্যানই তাদের জীবনে এটা অনুভব করেছে”। কোহলি দাবি করেন যে তিনি সেই মুহূর্তে নিজেকে বিশ্বের সবচেয়ে নিঃসঙ্গ মানুষ বলে মনে করেন কারণ তিনি তার পক্ষে ঘটতে থাকা এই সব নেগেটিভ জিনিসগুলো উল্টে দিতে পারেননি। “আমি বুঝতে পারছইলাম না কিভাবে এটা কাটিয়ে উঠতে হয়। এটা একটা পর্যায় ছিল যখন আমি আক্ষরিক অর্থে কিছু করতে পারিনি। আমার মনে হচ্ছিল আমি বিশ্বের সবচেয়ে নিঃসঙ্গ মানুষ” তিনি ইংল্যান্ড সফর সম্পর্কে বলেন।
কোহলি আরও বলেন যে তিনি এই মুহূর্তে তার জীবনে সমর্থন পেয়েছেন কিন্তু তাঁর কিছু পেশাদারী সাহায্য প্রয়োজন ছিল। “ব্যক্তিগতভাবে, আমার ধারনা হয় যে আপনি একটি বড় দলের অংশ হওয়া সত্ত্বেও আপনি নিঃসঙ্গতা অনুভব করতে পারেন। আমি বলব না যে এই কঠিন সময় নিয়ে আমি কারোর সাথে কথা বলিনি তবে আমার একজন পেশাদার গাইডের দরকার ছিল যে আমাকে পুরোপুরি বুঝতে পারবে, আমি মনে করি এটা একটা বিশাল ফ্যাক্টর”। তিনি বলেন “এমনকি এই সময় ঘুমাতেও কষ্ট হয়েছে, আমার মনে হচ্ছে আমি সকালে ঘুম থেকে উঠতে চাই না। নিজের উপর আমার কোনো আস্থা ছিল না যে আমি কি করবো?”
কোহলি বলেন, “অনেক মানুষ দীর্ঘ সময় ধরে এই অনুভূতিতে ভুগছে, এটা মাসের পর মাস ধরে চলে, এটা পুরো ক্রিকেট মরশুম ধরে চলে, মানুষ এর থেকে বেরিয়ে আসতে পারে না”। ভারতীয় অধিনায়ক মনে করেন বিষণ্ণতা মোকাবেলায় পেশাগত সাহায্য প্রয়োজন। ক্রিকেটে শারীরিক ফিটনেসের সাথে সাথে মানসিকভাবেও পুরপুরি তরতাজা থাকা প্রয়োজন।
যাইহোক, কোহলি তার জীবনের কঠিন পর্যায় থেকে যোদ্ধার মত ফিরে আসেন যখন তিনি পরবর্তীতে ২০১৪ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজে ৬৯২ রান করেন। তবে বিরাটের এই বিবৃতি আমাদের শিখিয়ে দিয়ে যায় যে কঠিন পরিস্থিতিতেও কিভাবে লড়াই ছালিয়ে যেতে হয়। কঠিন পরিস্থিতি থেকে নিজেকে গুতিয়ে না নিয়ে সামনে দাঁড়িয়ে তাঁর মোকাবিলা করতে হবে। আর মানসিক অবসাদকে কোনোভাবেই অবহেলা করা উচিৎ নয়।
