
ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগের (আইপিএল) ত্রয়োদশ সংস্করণ সর্বকালের সবচেয়ে প্রতিযোগিতামূলক মরশুম ছিল। শীর্ষ চার পদের জন্য, সবকটি দল ভীষণভাবে লড়াই চালিয়ে যায়। গত বছর, সমর্থকরা প্রথমবারের মত ডাবল সুপার ওভারের সাক্ষী ছিল। যাই হোক, KXIP এক মরিয়া অবস্থান থেকে চমৎকার প্রত্যাবর্তন করেছিল। কিন্তু, তারপরেও তারা প্লে-অফে যেতে পারেনি। মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের কথা বলতে গিয়ে বলতে হয় তারা গত বছর প্রভাবশালী দল ছিল, আর তাই আমরা একতরফা ফাইনাল দেখেছি। এখন, যখন আমরা আরেকটি মৌসুমের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি, বিসিসিআই কিছু নতুন এবং উত্তেজনাকর নিয়ম বাস্তবায়নের জন্য উদগ্রীব। এটি যে শুধুমাত্র খেলায় রোমাঞ্চ প্রদান করবে না, একই সাথে খেলার বিন্যাসের মধ্যে লাইফলাইন হিসেবে কাজ করবে। বিবিএল একটি নিখুঁত দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে কিভাবে খেলার শর্ট ফরম্যাটে নতুন নিয়ম প্রয়োগ করা যায়। কিভাবে? বিস্তারিত দেখুন। আইপিএল ২০২১-এ ৫টি আকর্ষণীয় নিয়মকানুন বাস্তবায়ন করার কথা ভাবা হচ্ছে:
১. পাওয়ার সার্জ : পাওয়ার সার্জ বিগ ব্যাশ লীগের দশম মরশুমে চালু করা হয়। এক্ষেত্রে দুই ওভারের জন্য ফিল্ডিং দল ত্রিশ গজ বৃত্তের বাইরে মাত্র দুইজন খেলোয়াড় রাখার অনুমতি দেওয়া হয়। ব্যাটিং দল তাদের ইনিংসের একাদশ ওভার থেকে যে কোন সময় এই নিয়ম আহ্বান করতে পারে। এই নিয়ম জারি করার ক্ষেত্রে অনেকেরি অমত রয়েছে। এই নিয়ম বাস্তবায়ন খেলার জন্য মোটেই ভালো পদক্ষেপ নয় বলে তারা মনে করছেন। মাঠ ফিল্ডিং নিয়ম মূল পাওয়ারপ্লে ওভারের সমান থাকবে। যাই হোক, এটা আইপিএলে প্রতিযোগিতায় আলাদা মশলা অ্যাড করতে পারে।
২. এক্স-ফ্যাক্টর : গত বছর চেন্নাই সুপার কিংস তাদের খেলোয়াড়দের সঠিক বডি ল্যাঙ্গুয়েজের অভাবে সংগ্রাম করে। ক্লান্তি, উইকেটের মাঝখানে দুর্বলভাবে দৌড়ানো দলের পারফরম্যান্সকে প্রভাবিত করে। এবং তারা টুর্নামেন্টে টিকে থাকতে পারে না। গত বছর, এটা ছিল চেন্নাই সুপার কিংসকে প্রভাবিত করেছিল, এই বছর, এটা অন্য কিছু দলকেও প্রভাবিত করতে পারে। এটা বন্ধ করতে, তাদের এক্স ফ্যাক্টর নিয়ম প্রয়োগ করা উচিত. একটি এক্স-ফ্যাক্টর প্লেয়ারকে টিম শীটে 12 তম বা 13 তম খেলোয়াড় হিসাবে নামকরণ করা হয়। তিনি প্রথম ইনিংসের 10 ওভার অতিক্রম হওয়ার পর মাঠে নামবেন। যে কোন খেলোয়াড় যারা এখনো ব্যাট করেননি তাঁকে প্রতিস্থাপন করতে পারেন। এছাড়াও এই নিয়ম বোলারদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। একটি এক্স-ফ্যাক্টর প্লেয়ারকে এছাড়াও ফিল্ডিং সাইড দ্বারা ব্যবহার করা যেতে পারে। অতএব, এক্স-ফ্যাক্টর নিয়ম আইপিএলের নতুন তালিকায় রয়েছে।
৩. ক্লান্ত প্লেয়ারদের প্রতিস্থাপন ( Fatigue Replacement) : ক্লান্তি প্রতিস্থাপন এক্স ফ্যাক্টর নিয়মের একটি উন্নত সংস্করণ। গত মৌসুমের বেশীরভাগ সময় সংযুক্ত আরব আমিরাতের কঠোর পরিবেশের কারণে দলগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর ফলে মাঠে খেলোয়াড়রা ক্লান্তি বোধ করতে থাকেন। যাই হোক, এই নিয়মে যদি কোন ব্যাটসম্যান বা বোলার ক্লান্ত অনুভব করে, তাহলে তাকে একজন বেঞ্চখেলোয়াড় দ্বারা প্রতিস্থাপিত করা যেতে পারে। যেহেতু এই নিয়ম উভয় পক্ষের উপর প্রয়োগ করা হচ্ছে, কোন অন্যায় নেই! অতএব, ক্লান্তি অবসর আসন্ন আইপিএলে পরিবর্তন আনতে পারে।
৪. বোনাস পয়েন্ট : এটা শুনে সবাই বিস্মিত যে বোনাস পয়েন্ট ক্রিকেটে ব্যবহার করা হচ্ছে। কিন্তু বোনাস পয়েন্ট নিয়ম কেমন হবে? বিসিসিআই ঠিক করেছে দ্বিতীয় ইনিংসে কোন দল যদি তাদের প্রতিপক্ষের চেয়ে এগিয়ে থাকে তাহলে তারা বোনাস পয়েন্ট পাবে। এটি সমর্থকদের ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগে পয়েন্ট টেবিলের পরিস্থিতি সম্পর্কে একটি পরিষ্কার চিত্র পেতে সাহায্য করবে। গত বছর, প্রতিটি দলকে তাদের চূড়ান্ত অবস্থান জানতে লীগের চূড়ান্ত ম্যাচ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছিল। তাই, খেলার অনুসারীদের মধ্যে অনেক বিভ্রান্তি ছিল। এটির নিষ্পত্তি করতে, বিসিসিআই পুরো ম্যাচ জুড়ে আধিপত্য বিস্তারকারী দলকে বোনাস পয়েন্ট নিয়মের আওতায় আনতে পারে। অতএব, বোনাস পয়েন্ট নিয়ম এইবারের তালিকায় অন্যতম আকর্ষণ।
৫. প্লেয়িং ইলেভেনে পাঁচজন বিদেশী খেলোয়াড় : হ্যাঁ, ঠিকই পড়েছেন। এই নিয়ম বুঝতে, রাজস্থান রয়্যালসের উদাহরণ নেওয়া যাক। রয়্যালসের টুর্নামেন্টে সেরা বিদেশী কম্বিনেশন ছিল। কিন্তু, অনভিজ্ঞ ভারতীয় খেলোয়াড়দের ব্যর্থতার কারণে, তারা শীর্ষ চারে প্রবেশ করতে ব্যর্থ হয়।এই ঘটনা আসন্ন মরশুমে যে কোন দলের সাথে ঘটতে পারে। যেহেতু আইপিএল এমন একটি প্ল্যাটফর্ম যেখানে প্রতিভারা সুযোগের আশায় থাকে। বোর্ডের উচিত তাদের ট্যাগলাইনে কিছু বিদেশী খেলোয়াড়কে অন্তর্ভুক্ত করা। প্রথম একাদশ পাঁচজন বিদেশী এবং ছয়জন ভারতীয় খেলোয়াড়দের নিয়ে গরে উঠলে প্রতিযোগিতার মাত্রা বৃদ্ধি পাবে। এটি আইপিএলে একটি বিপ্লব আনতে পারে। ফলে, এই নিয়মটি তালিকায় জায়গা পেয়েছে।
